পৃষ্ঠাসমূহ

শনিবার, ৯ জুন, ২০১২

মানুষের কল্যাণে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং


মার্কেটিং বা বিপণনের একটি নতুন ও অনন্য আবিষ্কার মাল্টিলেভেল মার্কেটিংআমেরিকার বিখ্যাত কেমিস্ট ডঃ কাল রেইন বোর্গ তার উৎপাদিত কৃত্রিম ভিটামিন (যা আয়োডিন ও ভিটামিন এর  সংমিশ্রনে তৈরী) বাজারজাত করনের জন্য সর্বপ্রথম বহুমাত্রিক পদ্ধতি এর ধারনা প্রবর্তন করেনপাশাপাশি ক্যালিফোনিয়া ভিটামিন, নামে একটি কোম্পানী প্রতিষ্ঠা করেন যা বিশ্বের প্রথম নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কোম্পানী বলে স্বীকৃতি পায়কারন ১৯৪০ সালের শুরুতে এটিই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যার বিক্রয় কার্যক্রম ছিল বহুস্তরে বিভক্ত, যে ধারনা হতে জন্ম নেয় বহুমাত্রিক বিপণন পদ্ধতি বা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতিআমরা বিপণন বা মার্কেটিং এর বিভিন্ন ধরণ বা কৌশল দেখে থাকি বিশেষ কয়েকটি ধরণ হলোঃ 

() সরাসরি বিপণন পদ্ধতি (Direct Selling) 
() ট্রেডিশনাল পদ্ধতি (Traditional System) 
() টেলি মার্কেটিং (Tele Marketing) 
() ইন্টারনেট মার্কেটিং (Internet Marketing) ইত্যাদি। 

যে কোন বিপণন পদ্ধতির চেয়ে এমএলএম পদ্ধতির বেশ কিছু পার্থক্য লক্ষ্যণীয় তম্মধ্যে অসংখ্য মানুষের অংশগ্রহণের বিষয়টি অন্যতম অর্থাৎ যেখানে ক্রেতাই পরিবেশক বা কোম্পানীর প্রতিনিধি হিসেবে কাজের সুযোগ পায়মধ্যস্বত্বভোগীদের সংখ্যা কমিয়ে বা এড়িয়ে কোম্পানী কর্তৃক লাভের অংশ কিংবা মার্কেটিং খরচ সাশ্রয় করে সাধারণ ক্রেতা বা পরিবেশকদের মাঝে বন্টন করা হয়, ক্রেতা বা পরিবেশকগণ টীম বা দল গঠন করে নিজেদের বিক্রয় বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়এভাবে অসংখ্য মানুষ পার্ট টাইম বা ফুল টাইম আয়ের পথ হিসেবে এ পদ্ধতিকে বেছে নেয়ার সুযোগ পায় সংক্ষেপে আমরা দেখব কেন এমএলএম ব্যবসাকে জনকল্যাণকর বলা হয়ে থাকেঃ
  1. এমএলএম ব্যবসায় সরাসরি ক্রেতাগণ জড়িত থাকে বিধায় ক্রেতারা নিজেদের পছন্দসই পণ্য বেছে নেয়ার সুযোগ পায়
  2. এমএলএম ব্যবসায় পণ্য বিক্রয়ের উপর কমিশন অর্জন করা যায় বিধায় অসংখ্য মানুষ এ ব্যবসা হতে আয়ের সুযোগ পায়
  3. টীম বা দল গঠন করে দীর্ঘমেয়াদী ও রয়েলটি আয়ের সুযোগ থাকে বিধায় মাল্টিলেভেল বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিকে অনেকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে কর্মসংস্থান খুজেঁ পেয়েছে
  4. ট্রেডিশনাল কোম্পানীগুলো সামাজিক দায়িত্বপালনে (Social Responsibility) সচরাচর জড়িত থাকে কিন্তু নেটওয়ার্ক বা এমএলএম কোম্পানীগুলো সামাজিক দায়িত্বপালন অত্যাবশ্যক কারণ ক্রেতা সন্তুষ্টিই এমএলএম ব্যবসা মূল লক্ষ্য
  5. এমএলএম কোম্পানীগুলো সরাসরি পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে জড়িত যার দরুন ব্যবস্থাপনা ও ক্রেতা-পরিবেশকদের মধ্যে বিভিন্ন মতামত ও অভিযোগসমূহ নিষ্পত্তি হয়ে থাকে

শনিবার, ৫ মে, ২০১২

একটি পদ্ধতির ভুল প্রয়োগ এবং এর শিরচ্ছেদ


মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এম এল এম) বা ডিরেক্ট সেলস ব্যাবসা বেশ জাঁকিয়ে বসেছে আমাদের দেশে। আর এদের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে দেশের লক্ষ্ লক্ষ মানুষ। অত্যন্ত লোভনীয়, অকল্পনীয়,  অফার আর অল্পদিনে কোটি পতি হবার স্বপ্ন নিয়ে ঝুঁকছে দেশের হাজার হাজার বেকার যুবক। শুধু বেকার যুবকই নয়, অনেক শিক্ষিত কর্ম জীবী লোকজন ও ছুটছে এই ব্যবসার দিকে। আলাদীন এর যাদুর প্রদীপ এর মত রাতা রাতি কোটিপতি হতে কে না চায়! কিন্তু আমাদের দেশের এম এল এম ব্যাবসা যেই ভাবে এগুচ্ছে তাতে করে এর ভয়াবহতা আমরা ইতি মধ্যেই টের পেয়েছি।

প্রতিটি আবিষ্কারের ভাল-মন্দ দুটি দিক রয়েছে তবে তা নির্ভর করে মানুষের ওপর। তেমনি বিভিন্ন পদ্ধতি, কৌশল কিংবা গবেষনালব্ধ বিষয়বস্তুর ইতিবাচক ব্যবহার সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পূর্বশর্ত। আমরা সাধারণত উন্নত বিশ্ব হতে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে পিছিয়ে আছি এর অন্যতম কারণ নতুন প্রযুক্তি ও পদ্ধতি ব্যবহারে অনীহা ও অজ্ঞতা। আর আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি আধুনিক প্রযুক্তির অপব্যবহারের  দরুন।
এবার মূল কথায় আসি, নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতি সমগ্র বিশ্বে একটা ভালো অবস্থান তৈরী করতে সক্ষম হলেও বাংলাদেশে এর অবস্থান বিপরীত কেন? এর মূল কারণ গুলো হচ্ছে প্রধানত নিম্নরূপঃ

১। ৬/৮ মাসে বিনিয়োগ ক্রিত অর্থের দিগুন দেওয়ার প্রতিস্রুতি প্রদান করা, যা যে কোন কম্পানির জন্য                                      অত্তান্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
২। ম্যাচিং এবং ডিরেক্ট সেলস কমিশন১০% বা তার আধিক প্রদান করা, যার মাধ্যমে কম্পানির দক্ষ নেটওয়ার্কাররা বিনিয়োগ ক্রিত টাকার আনেকটাই দক্ষ নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে তুলে নিতে সক্ষম হয়।
৩।  এখানে সুযোগ সন্ধানী, জোচ্চোর মানুষ অসংখ্য, যারা আনবরত কিছু নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ নিয়ে গেম্বলিং করে যাচ্ছে।
 
অতীতের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় প্রতিষ্ঠান গুলো আগে থেকে কোন প্রজেক্ট না করে শুধু মাত্র একটি নাম মাত্র সফটওয়্যারের মাধ্যমে ব্যবসায় শুরু করে দেয়। এর ফলে প্রতিষ্ঠানের প্রথম বিনিয়োগ গুলো কোন উৎপাদন মূলক খাতে বিনিয়োগের পরিবর্তে, কম্পানির পরিচালন খাতে ব্যয় হয়ে যায়। এই কারনেই কম্পানি গুলোকে সঠিক সময়ে বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্ত কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে সমস্যা হয়েছে।

সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তা পা্ওয়া একটি বিপণন পদ্ধতি বাংলাদেশে এসে প্রতারণা ফাঁদ হিসেবে আখ্যা পেল। ধিক্কার দিই তাদের যাদের কারণে আজ এমএলএম শিল্প প্রশ্নের সম্মুখীন, অভিশপ্ত তারা, অভিশপ্ত তাদের অনুসারীরা। লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষ বাংলাদেশের এমএলএম নাম ভাঙ্গানো প্রতারক ব্যবসায়িদের কবলে পড়ে এখন বিপর্যস্ত।

বস্তুতপক্ষে কারো সাহায্যই প্রয়োজন নেই যদি বিবেকবান মানুষগুলো একত্রিত হয়, যারা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত আছেন তারা সোচ্চার হয়। আমরা শুধু ভুল আর ভুল করেই যাচ্ছি, আর এ ভুলের মাশুল দিতে হচ্ছে লক্ষ লক্ষ গ্রাহক/ক্রেতাদের। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিটিকে জটিল করে না তোলে খুব সহজে ভাবুন এর চেয়ে চমৎকার বিপণন পদ্ধতি দ্বিতীয় কোনটি হতে পারেনা। বর্তমান সময় হচ্ছে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর হাই টাইম সুতারাং ভুল পথে পাঁ না বাড়িয়ে সঠিক পথ বেছে নিতে হবে।

ইতিপূর্বে বিভিন্ন মাল্টি লেভেল মার্কেটিং বা (এম এল এম) কোম্পানির ব্যবসায় পরিচালনায় পদ্ধতিগত দুর্বলতা ও ব্যবসায় আসফল হওয়ার কারনগুলো বিবেচনা করে বর্তমানে কিচ্ছু কোম্পানি নতুন ভাবে এই ব্যবসায়কে গড়ে তুলার চেষ্টা করছে। আমাদের সকলেরই উচিৎ দেশ ও জাতির কল্লানে এই ব্যবসায়কে ব্যবহার করা। এক্ষেত্রে বর্তমানে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে এমন কোম্পানি গুলোকে আমাদের সকলের সহায়তা করা উচিৎ।